আজ বৃহস্পতিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জমিজমার দখল নিয়ে বিরোধের ক্ষেত্রে যা করবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জমিজমার দখলদারিত্ব, সীমানা নির্ণয়করণ নিয়ে আমাদের দেশে রক্তারক্তি ও প্রাণহানির ঘটনা কারো কাছে অপরিচিত নয়। স্থাবর সম্পত্তির নিয়ে এই রক্তক্ষয়ী কোন্দল-কলহ ও দাঙ্গার বিরুদ্ধে চাইলেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

বাংলাদেশে প্রচলিত ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারার মাধ্যমে জনসাধারণের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। সম্পত্তির এই বিরোধ নিয়ে থানায় এজাহার করা যায়। চাইলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারের বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জানানোর মাধ্যমে আইনি প্রতিকার পাওয়া যাবে।

স্থাবর সম্পত্তি নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারার অধীন ম্যাজিস্ট্রেট এই ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকেন।

কার্যবিধির ১৪৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, যখন কোন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ রিপোর্ট বা অন্য কোনভাবে সংবাদ পেয়ে যদি তিনি যৌক্তিকতার নিরিখে সন্তুষ্ট হোন যে, তার এখতিয়ারভুক্ত এলাকার মধ্যে জমি বা পানি বা সীমানা সম্পর্কে এমন বিরোধ রয়েছে যা শান্তিভঙ্গ ঘটাতে পারে। তখন তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিরোধীয় পক্ষসমূহকে ব্যক্তিগতভাবে বা উকিলের মাধ্যমে হাজির হওয়ার এবং বিরোধের বিষয়বস্তুতে প্রকৃত দখল সম্পর্কে উভয়পক্ষের স্ব-স্ব দাবি সম্বলিত লিখিত বিবৃতি পেশ করার নির্দেশ দিয়ে লিখিত আদেশ দিবেন।

উভয় পক্ষের বক্তব্য ও সাক্ষ্যাদি বিবেচনা করার পর যদি ম্যাজিস্ট্রেট মনে করেন তর্কিত সম্পত্তি বলপূর্বক ও অন্যায়ভাবে বেদখল করা হয়েছে তাহলে দখলকৃত পক্ষকে দখলদার ছিলো বলে ঘোষণা করবেন। আর যদি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যৌক্তিকভাবে মনে হয় জমির প্রকৃত দখলকার কেউ ছিলেন না কিংবা কোন পক্ষ দখলকার ছিলো তা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য তাহলে এমন ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট ওই সম্পত্তি ক্রোক করে নিবেন। ক্রোককৃত সম্পত্তি দেখভালের জন্য একজন রিসিভার নিয়োগ করবেন। আর যদি ওই ক্রোককৃত সম্পত্তি ক্ষয়শীল বা দ্রুত পচনশীল হয় তবে ম্যাজিস্ট্রেট চাইলে বিক্রি করতে পারবেন।

পিএলডি ১৯৭৪ করাচি ১২৪ মামলায় বলা হয়েছে, ক্রোককৃত সম্পত্তি যদি এমন হয় যে তা সার্বক্ষণিক দেখাশোনার প্রয়োজন সেক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট ওই সম্পত্তির হেফাজতের জন্য ১৪৫ ধারার (৪) উপধারা অনুসারে কোন ব্যক্তিকে ব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন।

পিএলডি ১৯৬৯ লাহোর ৭৪ মামলায় বলা হয়েছে, ক্রোককৃত সম্পত্তি যদি পচনশীল বা প্রাকৃতিকভাবে বিনষ্ট হবে তবে ম্যাজিস্ট্রেট তাহলে ওই সম্পত্তি ১৪৫ ধারার (৮) উপধারার ক্ষমতাবলে বিক্রি করার আদেশ দিতে পারেন।